শিবের ব্রত পালন বিধি পূজাকর্মের উপকরণ ও শ্রাবণ মাসে শিবের ব্রত পালন করলে মনস্কামনা পূরণ হয়
হিন্দুদের কাছে শ্রাবণ হল পবিত্র মাস। এই মাসে কিছু আচার পালন করলে মনস্কামনা পূরণ হয় মানুষের। শ্রাবণ মাস শিবের মাস। এই মাসের প্রতি সোমবার শিবের ব্রত ধারণ করেন বহু মানুষ জন। তাদের উদ্দেশ্য মনস্কামনা পূরণ বা কৃপা লাভ জন্য। কাঁচা দুধ দিয়ে শিবলিঙ্গ স্নান করাতে হয়।
শ্রাবণেই হয়েছিল দেবতা আর অসুরের সমুদ্র মন্থন। মন্থনে উঠে-আসা বিষ নিজ কণ্ঠে ধারণ করে মহাদেব হয়েছিলেন নীলকণ্ঠ, বাঁচিয়ে ছিলেন সৃষ্টি। তাই শ্রাবণ মাস উৎসর্গীকৃত হয়েছে মহাদেবের উদ্দেশে।
শ্রাবণ মাসে প্রতিদিন স্নানের পরে শিবস্তোত্র পাঠ অত্যন্ত জরুরি শিবভক্তদের কাছে। মহাদেব প্রসন্নও হন পাঠক বা ভক্তের প্রতি। অন্য মাসে রুদ্রাক্ষ ধারণের চেয়ে শ্রাবণে ধারণ করলে ফল অনেক বেশি ভাল হয়। শ্রাবণে অতি অবশ্যই শিবলঙ্গের মাথায় বেলপাতা দেওয়া আবশ্যক। এটা নিয়মের মধ্যেই পড়ে। শ্রাবণ মাসে স্ফটিক-শিবলিঙ্গ বসালে অত্যন্ত শুভফল দেবে। শ্রাবণ মাসের প্রতি সন্ধ্যায় শিবের আরতি করা অবশ্যকরণীয় কর্তব্যকর্ম। বহু জায়গায় মঙ্গল গৌরীর পূজা হয়ে থাকে।
শিবের ব্রতপালনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়মগুলি কী, সেটা জানার আগে সাধারণ শিবলিঙ্গ এবং বাণলিঙ্গর তফাত জেনে রাখা উচিত। কেন না, সাধারণ শিবলিঙ্গ আর বাণলিঙ্গর পূজার মন্ত্র আলাদা।
নর্মদা নদীর জলে যে শিবলিঙ্গ পাওয়া যায়, তাকে বলা হয় বাণলিঙ্গ। এই বাণলিঙ্গ শিবের স্বয়ম্ভু রূপ; নারায়ণ শিলার মতো। তাই যাঁদের বাড়িতে বাণলিঙ্গ আছে, তাঁরা আলাদা মন্ত্র অনুসরণ করবেন।
সোমবার সূর্যোদয়ের তিন ঘণ্টার মধ্যেই শিবপূজা সেরে নেওয়া নিয়ম। খুব দেরি হলে অপেক্ষা করা যেতে পারে বেলা বারোটা পর্যন্ত। তার পরে, সোমবারের শিবপূজা করা যায় না।
সোমবার শিবপূজার জন্য হাতের কাছে গুছিয়ে নিন পূজার উপচার। ধূপ ও প্রদীপ জ্বেলে নিন। এবার হাত জোড় করে বলুন ---
ওঁ সর্বমঙ্গলমাঙ্গল্যং বরেণ্যং বরদং শুভম্।
নারায়ণং নমস্কৃত্য সর্বকর্মাণি কারয়েৎ।।
আচমন --- ডান হাতের তালু গোকর্ণাকৃতি করে মাষকলাই ডুবতে পারে এই পরিমাণ জল নিয়ে ‘ওঁ বিষ্ণু' মন্ত্রটি পাঠ করে পান করুন। এইভাবে মোট তিন বার জলপান করে আচমন করার পর হাত জোড় করে এই মন্ত্রটি পাঠ করুন ---
ওঁ তদ্বিষ্ণোঃ পরমং পদং সদা পশ্যন্তি সূরয়ঃ দিবীব চক্ষুরাততম্।
ওঁ অপবিত্রঃ পবিত্রো বা সর্বাবস্থাং গতোঽপি বা।
যঃ স্মরেৎ পুণ্ডরীকাক্ষং স বাহ্যাভ্যন্তরঃ শুচিঃ।।
জলশুদ্ধি --- তাম্রপাত্রে বা কোশায় গঙ্গাজল বা পরিষ্কার জল নিয়ে মধ্যমা দ্বারা সেই জল স্পর্শ করে এই মন্ত্রটি পাঠ করুন ---
ওঁ গঙ্গে চ যমুনে চৈব গোদাবরি সরস্বতি।
নর্মদে সিন্ধু-কাবেরি জলেঽস্মিন সন্নিধিং কুরু।।
সূর্যমণ্ডল থেকে সকল তীর্থ সেই পার্শ্বস্থ জলে এসে উপস্থিত হয়েছেন এই চিন্তা করতে করতে সেই জলে একটি ফুল দিয়ে তীর্থপূজা করুন।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে তীর্থেভ্যো নমঃ।
এরপর এই জল সামান্য কুশীতে নিয়ে পূজাদ্রব্যের উপর ও নিজের মাথায় ছিটিয়ে দিন।
আসনশুদ্ধি --- যে আসনে বসেছেন, সেই আসনটিতে একটি ফুল দিয়ে হাত জোড় করে এই মন্ত্রটি পাঠ করুন ----
ওঁ পৃথ্বি ত্বয়া ধৃতা লোকা দেবি ত্বং বিষ্ণুনা ধৃতা।
ত্বঞ্চ ধারায় মাং নিত্যং পবিত্রং কুরু চাসনম্।।
পুষ্পশুদ্ধি --
পুষ্প স্পর্শ করে এই মন্ত্রটি পাঠ করুন—
ওঁ পুষ্পে পুষ্পে মহাপুষ্পে সুপুষ্পে পুষ্পসম্ভবে। পুষ্পাচয়াবকীর্ণে চ হুঁ ফট্ স্বাহা।
ভূতশুদ্ধি ----
হাত জোড় করে মনে মনে এই চারটি মন্ত্র পাঠ করুন ---
ওঁ ভূতশৃঙ্গাটাচ্ছিরঃ সুষুম্নাপথেন জীবশিবং পরমশিবপদে যোজয়ামি স্বাহা ।।
ওঁ যং লিঙ্গশরীরং শোষয় শোষয় স্বাহা ।।
ওঁ রং সংকোচশরীরং দহ দহ স্বাহা ।।
ওঁ পরমশিব সুষুম্নাপথেন মূলশৃঙ্গাটমুল্লসোল্লস জ্বল জ্বল প্রজ্জ্বল প্রজ্জ্বল সোঽহং হংসঃ স্বাহা ।।
প্রাণায়াম ---
‘ওঁ' বা গুরুপ্রদত্ত বীজমন্ত্রে (বাণেশ্বর শিবের ক্ষেত্রে ‘ঐঁ' মন্ত্রে) চার বার ৪/১৬/৮ ক্রমে পূরক, কুম্ভক ও রেচক করে প্রাণায়ম করুন।
শ্রীগুর্বাদিপূজা ---
এরপর একটি একটি করে গন্ধপুষ্পদ্বারা শ্রীগুরু ও অন্যান্য দেবতাদের পূজা করুন। মন্ত্রগুলি হল -----
ঐঁ এতে গন্ধপুষ্পে শ্রীগুরবে নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে গণেশাদিপঞ্চদেবতাভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে আদিত্যাদিনবগ্রহেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে ইন্দ্রাদিদশদিকপালেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে কাল্যাদিদশমহাবিদ্যাভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে মৎস্যাদিদশাবতারেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে মৎস্যাদিদশাবতারেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে সর্বেভ্যো দেবেভ্যো নমঃ।
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে সর্বাভ্যো দেবীভ্যো নমঃ।
ধ্যান ----
এরপর একটি ফুল নিয়ে (সম্ভব হলে কূর্মমুদ্রায় ফুলটি নেবেন) শিবের ধ্যান করবেন। শিবের সাধারণ ধ্যানমন্ত্র ও বাণেশ্বর ধ্যানমন্ত্র দুটি নিচে দেওয়া হল ----
সাধারণ ধ্যানমন্ত্র ----
ওঁ ধ্যায়েন্নিত্যং মহেশং রজতগিরিনিভং চারুচন্দ্রাবতংসং
রত্নাকল্পোজ্জ্বলাঙ্গং পরশুমৃগবরাভীতিহস্তং প্রসন্নম্।
পদ্মাসীনং সমন্তাৎ স্তুতমমরগণৈর্ব্যাঘ্রকৃত্তিং বসানং
বিশ্বাদ্যং বিশ্ববীজং নিখিলভয়হরং পঞ্চবক্ত্রং ত্রিনেত্রম্।।
বাণেশ্বর শিবের ধ্যান ---
ঐঁ প্রমত্তং শক্তিসংযুক্তং বাণাখ্যঞ্চ মহাপ্রভাং।
কামবাণান্বিতং দেবং সংসারদহনক্ষমম্।।
শৃঙ্গারাদি-রসোল্লাসং বাণাখ্যং পরমেশ্বরম্।
এবং ধ্যাত্বা বাণলিঙ্গং যজেত্তং পরমং শিবম্।।
স্নান ----
এরপর শিবকে স্নান করাবেন। গঙ্গাজলে শুদ্ধজলে চন্দন মিশ্রিত করে ঘণ্টা বাজাতে বাজাতে শিবকে স্নান করাবেন এই মন্ত্রে শিবকে স্নান করাবেন -----
ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম্।
উর্বারুকমিব বন্ধনান্মৃত্যোর্মুক্ষীয় মাঽমৃতাৎ।।
ওঁ তৎপুরুষায় বিদ্মহে মহাদেবায় ধীমহি তন্নো রুদ্রঃ প্রচোদয়াৎ ওঁ।
সাধারণ শিবলিঙ্গ ও বাণেশ্বর -- উভয়ক্ষেত্রেই স্নান মন্ত্র এক।
প্রধান পূজা --
স্নানের পর আরেকবার আগের ধ্যানমন্ত্রটি পাঠ করে শিবের ধ্যান করবেন। তারপর মনে মনে উপচারগুলি শিবকে উৎসর্গ করে মানসপূজা করবেন। মানসপূজার পর একে একে উপচারগুলি বাহ্যিকভাবে শিবকে সমর্পণ করবেন।
ওঁ নমঃ শিবায় এতৎ পাদ্যং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় এষঃ অর্ঘ্যঃ শিবায় নমঃ। (আতপচাল ও দূর্বা একটি সচন্দন বেলপাতায় করে ফুল সহ দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদমাচমনীয়ং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং স্নানীয়ং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় এষ গন্ধঃ শিবায় নমঃ। (চন্দনের ফোঁটা দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং সচন্দনপুষ্পং শিবায় নমঃ। (একটি চন্দনমাখানো ফুল দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং সচন্দনবিল্বপত্রং শিবায় নমঃ। (একটি চন্দনমাখানো বেলপাতা দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় এষ ধূপঃ শিবায় নমঃ। (ধূপটি শিবের সামনে তিনবার ঘুরিয়ে দেবতার বাঁ দিকে, অর্থাৎ নিজের ডানদিকে রাখুন)
ওঁ নমঃ শিবায় এষ দীপঃ শিবায় নমঃ। (প্রদীপটি শিবের সামনে তিনবার ঘুরিয়ে দেবতার ডানদিকে, অর্থাৎ নিজের বাঁ দিকে রাখুন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং সোপকরণনৈবেদ্যং শিবায় নিবেদয়ামি। (নৈবেদ্যের উপর অল্প সামান্যার্ঘ্য জল ছিটিয়ে দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং পানার্থোদকং শিবায় নমঃ। (পানীয় জলের উপর অল্প সামান্যার্ঘ্য জল ছিটিয়ে দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং পুনরাচমনীয়ং শিবায় নমঃ। (সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং তাম্বুলং শিবায় নমঃ। (একটি পান দিন, অভাবে সামান্যার্ঘ্য জল একটু দিন।)
ওঁ নমঃ শিবায় ইদং মাল্যং শিবায় নমঃ। (মালা থাকলে মালাটি পরিয়ে দিন)
বাণেশ্বর শিবলিঙ্গে দশোপচার পূজার মন্ত্র ---
ঐঁ এতৎ পাদ্যং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ এষঃ অর্ঘ্যঃ বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদমাচমনীয়ং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং স্নানীয়ং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ এষ গন্ধঃ বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং সচন্দনপুষ্পং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং সচন্দনবিল্বপত্রং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ এষ ধূপঃ বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ এষ দীপঃ বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং সোপকরণনৈবেদ্যং বাণেশ্বরশিবায় নিবেদয়ামি।
ঐঁ ইদং পানার্থোদকং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং পুনরাচমনীয়ং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং তাম্বুলং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
ঐঁ ইদং মাল্যং বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
পুষ্পাঞ্জলি ---
সচন্দন পুষ্প ও বেলপাতা নিয়ে এই মন্ত্রে এক, তিন অথবা পাঁচ বার অঞ্জলি দেবেন ---
সাধারণ পুষ্পাঞ্জলি ----
ওঁ নমো শিবায় এষ সচন্দনপুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলি নমো শিবায় নমঃ।
বাণেশ্বর শিবের পুষ্পাঞ্জলি ---
ঐঁ এষ সচন্দনপুষ্পবিল্বপত্রাঞ্জলি বাণেশ্বরশিবায় নমঃ।
গৌরীপূজা ---
এইভাবে শিবপূজা শেষ করে শিবলিঙ্গের গৌরীপীঠে একটি ফুল দিয়ে এই মন্ত্রে গৌরীর পূজা করুন ---
ওঁ হ্রীঁ এতে গন্ধপুষ্পে গৌর্যৈ নমঃ।
অষ্টমূর্তি পূজা --
বাণেশ্বর শিবে অষ্টমূর্তির পূজা করতে হয় না। কিন্তু অন্যান্য শিবলিঙ্গের ক্ষেত্রে করতে হয়। একটি ফুল দিয়ে এই মন্ত্রে অষ্টমূর্তির পূজা করুন --
ওঁ এতে গন্ধপুষ্পে অষ্টমূর্তিভ্যো নমঃ।
জপ ও জপসমর্পণ ---
এরপর ‘ওঁ নমঃ শিবায়' বা দীক্ষামন্ত্র ১০৮ বার জপ করে এই মন্ত্রে এক গণ্ডুষ জল শিবের নিচের দিকের ডান হাতের উদ্দেশ্যে প্রদান করুন --
ওঁ গুহ্যাতিগুহ্যগোপ্তা ত্বং গৃহাণাস্মৎকৃতং জপম্।
সিদ্ধির্ভবতু মে দেব ত্বৎপ্রসাদান্মহেশ্বর।।
প্রণাম --
এইবার এই মন্ত্রটি পড়ে সাষ্টাঙ্গে শিবকে প্রণাম করে পূজা সমাপ্ত করুন --
সাধারণ শিবলিঙ্গের ক্ষেত্রে --
ওঁ নমঃ শিবায় শান্তায় কারণত্রয়হেতবে।
নিবেদয়ামি চাত্মানং গতিস্তং পরমেশ্বরম্।।
বাণেশ্বর শিবের ক্ষেত্রে --
ওঁ বাণেশ্বরং নরকার্ণবতারণায় জ্ঞানপ্রদায় করুণাময়সাগরায়।
কর্পূরকুন্দধবলেন্দুজটাধরায় দারিদ্র্যদুঃখদহনায় নমঃ শিবায়।।
শ্রাবণ মানে কী ও শ্রাবণ মাসে কি হয়েছেঃ-
🌻 শ্রাবণ শিবের মাস, অকপট ভক্তিরও।
🌻 শ্রাবণ মানে কি নিছক অঝোর ধারা?
🌻 নাকি অন্য কোনও গুরুত্ব রয়েছে এই মাসটির?
🌻 পুরাণ ইত্যাদি থেকে বয়ে আসা ঐতিহ্যের এক বিপুল অংশ পৃক্ত হয়ে রয়েছে শ্রাবণ মাসের সঙ্গে।
🌻 হিন্দু পরম্পরায় শ্রাবণ এক পবিত্র মাস, এই মাসে কিছু আচার পালন করলে নাকি যাবতীয় মনস্কামনা পূর্ণ হয়— এমন ধারণা কালনিরবধি মনের মধ্যে বহন করে আসছেন হাজার হাজার মানুষ।
🌻 জেনে নেওয়া যাক শ্রাবণের মহিমা।
👉 শ্রাবণ শিবের মাস হিসেবে খ্যাত। এই মাসের প্রতিটি সোমবার শিবের ব্রত ধারণ করেন লক্ষ লক্ষ হিন্দু ধর্মাবলম্বী। ব্রতের উদ্দেশ্য একটাই, মনস্কামনা পূরণ। শিবমূর্তি বা লিঙ্গের প্রতি দুধ নিবেদন শ্রাবণ-শিবব্রতের অন্যতম প্রাধান আচার।
👉 পুরাণ অনুসারে শ্রাবণ মাসেই ঘটেছিল সমুদ্র মন্থন। মন্থনের ফলে ইঠে আসা হলাহল বিষকে নিজ কণ্ঠে ধারণ করে মহাদেব সৃষ্টিকে রক্ষা করেন। এই কারণেই এই মাস শিবের প্রতি উৎসর্গীকৃত।
👉 শ্রাবণ মাস উদযাপনের বিষয়ে কিছু কর্তব্য-অকর্তব্যকে পালন করে আসা হয় পরম্পরাগতভাবে।
👉 এই মাসের প্রতিদিন স্নানের পরে শিবস্তোত্র পাঠকে আবশ্যক মনে করেন শিবভক্তরা।
👉 শ্রাবণ রুদ্রাক্ষ ধারণের জন্য প্রশস্ত সময়।
👉 শ্রাবণে শিবলিঙ্গে বিল্বপত্র প্রদানের একটি নিয়ম রয়েছে। এই মাসের অষ্টমী, চতুর্থী, নবমী, অমাবস্যা, সংক্রান্তি ও সোমবারগুলিতে বিল্বপত্র শিবের মাথা থেকে নামাতে নেই বলে জানানো হয়।
👉 শ্রাবণে স্ফটিক শিবলিঙ্গ স্থাপন শুভফলদায়ী।
👉 শ্রাবণসন্ধ্যায় হরপার্বতীর আরতি অবশ্যকর্তব্য।
👉 উত্তরভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে শ্রাবন মাসে মঙ্গলগৌরী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
👉 ‘শ্রাবণ’ শব্দের উৎসে রয়েছে ‘শ্রবণ’। এই মাস যাবতীয় শুভ কথা শ্রবণের মাস।
0 comments:
Post a Comment